জকিগঞ্জে ধীরে নামছে বন্যার পানি, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সঙ্কট সর্বত্র, নতুন আতঙ্ক

জকিগঞ্জে ধীরে নামছে বন্যার পানি, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সঙ্কট সর্বত্র, নতুন আতঙ্ক

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: জকিগঞ্জ থেকে বন্যার পানি নামছে খুবই ধীরে। এখনো নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়িঘরে ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি রয়েছে। তাই মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না। এখনো বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন দুর্গত পরিবার। এসব পরিবারের মানুষের কপালে একটু খাবার জুটলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে। তবে পানি কমতে শুরু করায় মানুষজন বাড়িঘর থেকে বের হয়ে বাজার-সদাই, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র কিনছেন। কিছুটা উচুঁ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও হাওর ও নিম্নাঞ্চল এখনো প্লাবিত। মানুষজন আছেন চরম দুর্ভোগে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে নষ্ট হওয়ায় কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। খাবার পানির সংকট রয়েছে সর্বত্র। একমাসের ব্যবধানে দুটি ভয়াবহ বন্যায় নিঃস্ব হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে।

গত মে মাসে প্রায় ৮ দিন ও চলতি মাসে টানা ১০ দিন ধরে পানিবন্দি ছিলেন এই উপজেলার পৌর এলাকার আংশিকসহ ৯টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ। এখনো হাইল ইসলামপুর, তিরাশী, রহিমখাঁরচক, ষাইটশৌলা, জামালপুর, ডেমারগ্রাম, দেওয়ানচকসহ বিভিন্ন ইউপির নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি আছেন। গত শনিবার থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করায় দেখা যাচ্ছে ভয়াবহ বন্যার ক্ষত। পরপর দুটি বন্যার পানির স্রোতে ধসে গেছে মাটির তৈরি বহু বাড়িঘর। নষ্ট হয়েছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। বহু মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি না শুকালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট হবেনা।

ভিডিও দেখুন এই লিংকে ‘জকিগঞ্জ আই টিভি’

জানা যায়, এবারের ভয়াল বন্যায় উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রায় সব সড়কই প্লাবিত হয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও জনসাধারণ চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গতমাসের বন্যায়ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুটি বন্যায় নি¤œ আয়ের মানুষ পথে বসার উপক্রম। পুকুরের লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ঘরে থাকা ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র পচেঁ গেছে। আমন ধানের বীজতলাও তলিয়ে গেছে। গো খাদ্যর চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলের ও পুকুরের পানি নষ্ট হয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরম কষ্ট করছেন লোকজন। ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি। নিম্নাঞ্চলে পানি কমতে সময় লাগবে। তাই নিম্নাঞ্চলের মানুষজন খুবই দুর্ভোগে আছেন। পরপর দুটি বন্যার ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে প্রয়োজন এখন সরকারি সহযোগীতা।

এদিকে, আবারও বৃষ্টি শুরু হওয়ায় নতুন করে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভারতের উজানের বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জকিগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্থ ডাইকগুলো দিয়ে পানি প্রবেশ করে নতুন করে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ ডাইকগুলো দ্রুত মেরামত করতে সাধারণ মানুষ দাবী জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আতাউর রহমান জানান, বন্যার পানি ধীরে নামছে। এ কারণে মানুষ এখনো বাড়ি ফিরতে পারছেনা। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর